সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
বেতাগী প্রতিনিধি॥ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। গলছে হিমবাহ, বাড়ছে সমুদ্র পুষ্ঠের উচ্চতা। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিশ্বের উপকূলীয় অঞ্চল। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ুর প্রভাবের কারণে গাছপালা মরে যাচ্ছে।
গবেষকরা বলেছেন, ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা যে হারে বাড়ছে তা অব্যাহত থাকেলে আগামী ১০০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের এক বিস্তীর্ণ সমুদ্রের লোনা পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
উদ্বাস্তু হবে প্রায় তিন কোটি মানুষ । বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন কিছু কিছু অঞ্চলের আবহাওয়ার সঙ্কটময় অবস্থাকে আরও শোচনীয় করে তুলবে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারী, মোটামুটি ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলবে।
এ বিষয় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানে সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক ড. আব্দুস সাত্তার বলেন,’ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় সমুদ্রের লবনাক্ত পানি উপকূলের মিঠা পানির সাথে মিশে যাচ্ছে। ফলে লবনাক্তার কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের কিছুকিছু গাছপালা মরে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, তাপদাহ ও খরার মতো মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন বেশিরভাগটাই শুরু হয়েছে শিল্প বিপ্লবের পর থেকে। শিল্পায়নের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে।
সেই থেকে বেড়েই চলেছে কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গমন। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সদ্য কোর্ষ সম্পন্নকারী মো. খুরশিদ আলম অর্নব জানায়, ‘ বন্যা ও জলোচ্ছাসে সমুদ্রের পানি উপকূলে প্রবেশ করার ফলে কিছু কিছু গাছপালা মরে যেতে শুরু করেছে।’ আইপিসিসি’র হিসেবে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা যদি এক মিটার বাড়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ১৭ থেকে ২০ শতাংশ জমি সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
উদ্বাস্ত হবে প্রায় ২ কোটি মানুষ। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বায়ুম-লে ২০১৭ সালে থেকে নির্গত হওয়া কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ সর্বোচ্চ। ফলশ্রুতিতে পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ দশমিক ১ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়েছে।
আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, কার্বন নিঃসরণের বিদ্যমান ধারা অব্যাহত থাকলে বর্তমান শতাব্দীর মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা পূর্বের সময়ের তুলনায় ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে বাংলাদেশের উপকূলীয় জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তনের লবণাক্ততার ফলে তার ফলে উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। ইতিমধ্যে মিঠা পানির জলাধারেও লবণাক্ততা এসে যাচ্ছে। প্রাকৃৃতিক দুর্যোগ সিডর, আইলা, মহসিন, বুলবুল প্রতিহত করার মতো কোন প্রাকৃতিক ঢাল উপকূলে নেই ।
বিভিন্ন প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশের প্রভাবে ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, খরা, অসময়ে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ফসলের মৌসুমে বৃষ্টিহীন, মাটির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলের গাছপাল মরে যাচ্ছে।
সিডর, আইলা, ফনী, বুলবুল, আম্ফানের সময়ে সমুদ্রের খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। সুন্দরবনে লবণাক্ত পানি ভেতরে চলে আসছে, এ কারণে অনেক গাছপালা মরে যাচ্ছে।
Leave a Reply